ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫ , ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুনারুঘাটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম


আপডেট সময় : ২০২৫-১০-০২ ২১:৩৮:১৩
চুনারুঘাটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম চুনারুঘাটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম

চুনারুঘাট প্রতিনিধি:

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ফ্যাস্টিস আওয়ামী লীগের অনেক হেভিওয়েট নেতা যখন পালিয়ে গেছেন, তখনও দলের দপ্তর সম্পাদক পদ আঁকড়ে ধরে আছেন নোয়াখাইল্লা আবুল কালাম আজাদ। তিনি এখনও নির্ভয়ে চুনারুঘাট থানার সামনেই অফিস খুলে বসে আছেন।

একটি সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আবুল কালাম আজাদ সাবেক পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলীর আদরের দপ্তর সম্পাদক হয়ে দ্রুত প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। এর সুযোগে প্রথমে স্ত্রীর জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, পরে থানার মার্কেটের একটি ঘর অবৈধভাবে দখল নেন।

তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, দীর্ঘ এক যুগ ধরে দলীয় পদ ব্যবহার করে তিনি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতির পদ আঁকড়ে রেখেছেন। ওই পদকে কাজে লাগিয়ে বনভূমি থেকে শুরু হয় তার লুটপাট। অভিযোগ রয়েছে, তিনি দলের আরও কিছু নেতা-কর্মীকে নিয়ে গড়ে তোলেন একটি গাছ পাচার সিন্ডিকেট, যার ফলে উদ্যানে উজাড় হয়ে যায় বহু মূল্যবান গাছ। শুধু তাই নয়, পরে তার নজর পড়ে উদ্যানসংলগ্ন সিলিকা বালুর ওপর। এতে ধ্বংস হয় সাতটি পাহাড়ি চূড়া।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ কর্মী জানান, “আবুল কালাম আজাদের এই অপকর্মে সরাসরি মদদ দিতেন সাবেক মন্ত্রী মাহবুব আলী ও তার পিএস বেলাল মিয়া। কালামের কোটি কোটি টাকার বানিজ্যের একটি অংশ নিয়মিত যেত মিন্টু রোডের মন্ত্রীর বাসভবনে। আর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামি আন্দোলনসহ যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া ও পরিকল্পনা করা হতো কালামের থানা রোডে ব্যক্তিগত অফিসে বসে।"

অন্যদিকে, ইসলামী দলের সাথে যুক্ত চুনারুঘাটের এক বিশিষ্ট আলেম বলেন, “আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে গত ১৫ বছর ধরে আমাদের সমাজের আলেমদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। কোনো শান্তিপূর্ণ আয়োজন থাকলেই সে জামায়াতের তকমা দিয়ে পুলিশকে লেলিয়ে দিত। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখনও সে দাপটের সাথে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে—এখন তাকে মদদ দিচ্ছেন কে?”

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালাম নিজ উদ্যোগে সেখানে একটি মার্কেট নির্মাণ শুরু করেছিলেন। স্থানীয় আদিবাসীদের প্রতিবাদের মুখে কাজ বেশ কিছুটা এগোলেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ হয়ে যায়।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, “সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি ও সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে আবুল কালাম আজাদ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। মার্কেট নির্মাণের সময় আমরা বাধা দিয়েছিলাম। সেই কারণেই কাজ অসমাপ্ত রয়ে যায়।”



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ